হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির আল্লামা হাফেজ জুনায়েদ বাবুনগরী (হাফি.) বলেছেন, মদিনা সনদে দেশ চললে এদেশে কোনো ভাস্কর্য থাকতে পারে না।
মদিনায় কোনো ভাস্কর্য নেই। এদেশেও কোনো ভাস্কর্য থাকতে পারে না। আমি কোনো নেতার বা দলের নাম বলব না। আমি শরীয়তের কথা বলব।
শরীয়তে কোনো ভার্স্কযের অনুমতি নাই। আমাদের নবীর কোনো ভাস্কর্য কোথাও নাই। নবীর চাইতে তো বেশি আমরা কাউকে ভালোবাসি না।
তাহলে অন্য কারো ভাস্কর্য থাকবে কেন? যে দলের নেতা বা ব্যক্তির ভাস্কর্য বসাক না কেন, এমনকি আমার বাবার ভাস্কর্য বসালেও সেটা টেনে-হিঁচড়ে ফেলে দেব।
শুক্রবার রাতে হাটহাজারী সরকারি পার্বতী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে চট্টলার ইসলামিক সংগঠন ‘আল আমিন সংস্থা’ আয়োজিত তিন দিনব্যাপী তাফসিরুল কোরআন মাহফিলের শেষ দিনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আল্লামা বাবুনগরী বলেন, এদেশে ইসলামের কথা বলার কারণে, সত্য কথা বলার কারণে অনেককেই গ্রেপ্তার ও নির্যাতন করা হচ্ছে। রাসুল (সা.) এর আমলেও ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করার কারণে এরকম গ্রেপ্তার ও নির্যাতন করত মক্কার কাফেররা।
যতই গ্রেপ্তার ও নির্যাতন করা হোক আমরা সত্য কথা বলা বন্ধ করব না। ইসলামের কথা বলা বন্ধ করব না।
জুনায়েদ বাবুনগরী বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমরা আপনাকে ভালোবাসি। আমরা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ভালোবাসি।
আমরা আপনার দুশমন নই। আমাদের দুশমন মনে করবেন না। আপনার পেছনে যে নাস্তিক মুরতাদ ঘাপটি মেরে বসে আছে তারাই আপনার দুশমন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে কোনো আলেম ওলামারা মারেন নাই, মেরেছে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে থাকা লোকজন।
আমি আশংকা করতেছি আপনার পেছনে থাকা নাস্তিক মুরতাদেরা আপনার ক্ষতি করবে।
হেফাজত আমির বলেন, আমরা প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের সঙ্গে একমত। তিনি বলেছেন, আমাদের দেশ চলবে মদিনা সনদ অনুযায়ী। আমরাও চাই এ দেশ মদিনার সনদ অনুযায়ী চলুক। এদেশ রাশিয়ার সনদে চলবে না, চীনের সনদে চলবে না, ভারতের সনদে চলবে না, আমেরিকার সনদে চলবে না। মদিনার সনদ অনুযায়ী চলবে। মদিনার সনদ শান্তির সনদ। এই সনদে দেশ চলার কথা কেবল ঘোষণার মাধ্যমে নয় বাস্তবায়নও করতে হবে। মদিনার সনদে দেশ চললে এদেশে কোনো ইসলামবিরোধী কার্যকলাপ চলার কথা নয়। তবুও ইসলাম বিরোধী কার্যকলাপ চলছে।
কাদিয়ানীদের অমুসলমান ঘোষণার দাবি জানিয়ে অল্লামা বাবুনগরী বলেন, কাদিয়ানীরা নবীর শত্রু, নবীর দুশমন। কাদিয়ানীদের রাষ্ট্রীয়ভাবে অমুসলমান ঘোষণা করতে হবে। কাদিয়ানীরা মুসলমান নয়। তাদের সঙ্গে মুসলমানদের বিয়ে হতে পারে না। তাদেরকে মুসলমানদের কবরে দাফন করা যাবে না। তাদেরকে মুসলমানদের মতো ভিসা দিয়ে মক্কা মদিনায় যেতে দেওয়া যাবে না। আমি ৮১ জন আলেমকে সঙ্গে নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছি। আমি বলেছি কাদিয়ানীরা কেবল ইসলামের শত্রু নয়, এদেশের স্বাধীনতারও শত্রু।
ইসকনের কার্যকলাপ বন্ধের দাবি জানিয়ে বাবুনগরী বলেন, বর্তমান মুসলমানদের সবচেয়ে বড় শত্রু ইসকন। সরকারের কাছে দাবি ইসকনের কার্যক্রম বন্ধ করতে হবে। তারা এদেশে অশান্তি সৃষ্টি করতেছে। বিশৃংখলা সৃষ্টি করতেছে। এদেশের শান্তির পরিবেশ নষ্ট করতেছে।
আল্লামা বাবুনগরী বলেন, যদি প্রিয় নবীর শানে কোনো বেয়াদবি করা হয়, কোনো রকম অবজ্ঞা, অশ্রদ্ধা প্রদর্শন করা হয় এদেশের মুসলমানরা তাদের জিহবা কেটে ফেলবে।
তিনি বলেন, যতক্ষণ ফ্রান্সের ম্যাক্রো সকল মুসলমানদের কাছে ক্ষমা চাইবে না ততক্ষণ পর্যন্ত এদেশে ফ্রান্সের দূতাবাস থাকতে পারবে না। দূতাবাস বন্ধ করে দিতে হবে এবং ফ্রান্সের রাষ্ট্রদুতকে বহিষ্কার করতে হবে।
এছাড়া জাতীয় সংসদে ম্যাক্রোর বিরুদ্ধে ও ফ্রান্সের বিরুদ্ধে নিন্দা প্রস্তাব উত্থাপন করতে হবে।
সূত্র- কালের কণ্ঠ..